ঠাকুরগাঁওয়ের পৌরশহরে দুই ছাগলের মারামারিকে কেন্দ্র করে পারিবারিক বিবাদের জেরে আদালতে মামলা করেছে একপক্ষ। এই মামলায় ৭ নং ওয়ার্ড শাহপাড়া জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন জাহিদুল ইসলাম কে আসামী করা হয়েছে।

বৃহঃবার (৯ জুন) মামলার আসামি মুয়াজ্জিন জাহিদুল ইসলামকে অটো চালাতে দেখাযায়। কারন জানতে চাইলে ১ জুন হওয়া মামলার ভয়ে তিনি মসজিদের চাকরী ছেড়ে অটো চালাচ্ছেন বলে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে অনুসন্ধানে যায় গণমাধ্যমকর্মীরা।

প্রতিবেশি সূত্রে জানাগেছে, মুয়াজ্জিন জাহিদুলের বাড়িতে দুই ছাগলের মারামারিকে কেন্দ্র করে ছোট ভাইয়ের স্ত্রী তানিয়া ইসলাম ও মেঝো ভাইয়ের স্ত্রীর ফেন্সি বেগমের তর্কবিতর্ক হয়। একজনের ছাগল অপরজনকে ঢিসানোই ছিলো ঝামেলার সূত্রপাত। এক পর্যায়ে বড় ঝগড়া বাধে।

মামলার কাগজে দেখাযায়, মামলায় মুয়াজ্জিন ছাড়াও সেই মুয়াজ্জিনের স্ত্রী পারুল বেগম সহ মোট ৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন মুয়াজ্জিনের ছোট ভাই জাহিদ ইসলামের স্ত্রী তানিয়া ইসলাম। তারা হলেন জাহিদুলের মেঝ ভাই জাকিরুল ইসলাম, ভাইয়ের স্ত্রী ফেন্সী বেগম ও চাচাতো ভাই সাহেব।

গ্রেপ্তার আতঙ্ক নিয়ে ইজিবাইক চালানো মুয়াজ্জিন জাহিদুল ইসলাম বলেন, বাড়িতে আমার দুই ছোটো ভাইয়ের বউয়েদের ঝগড়া লাগছিলো। ঘটনার সময় আমি মসজিদে ছিলাম। আমার বউ অসুস্থ হওয়ায় ঘরের ভিতরে ছিলো। তবুও তারা আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। মসজিদে থাকলে পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে শুনেছি। তাই ভয়ে আর মসজিদ জাইনা। সংসার চালাতে ইজিবাইক চালাচ্ছি। আমার স্ত্রীও পালাতক আছে। এমন হয়রানিমূলক মামলার সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক। আমি হয়রানি ও আতঙ্কের শিকার।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ওয়ার্ড কাউন্সিলর রমজান আলী জানান, মসজিদের চাকুরী ছেড়ে অটো চালানোর ঘটনা বেশ দুঃখ জনক। ঘটনাটি বেশ কিছুদিন আগে দুপুর ১ টার সময়ের ঘটনা। নামাজের সময় হওয়ায় মুয়াজ্জিনকে আমি মসজিদেই দেখেছি।

রমজন আলী জানান, এ ঘটনার পর স্থানীয় ভাবে বসার পরেও সমাধান না হলে দুই পক্ষের মধ্যে থানায় বসে সমঝোতা করে দেয়া হয়েছিলো। পরবর্তীতে আবার একই ঘটনায় কেন মামলা দায়ের করা হলো তা ঠিক জানা নাই। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।

শাহপাড়া মসজিদের সহ-সভাপতি মোখলেসুর রহমান বলেন, এক মুয়াজ্জিনকে এভাবে হয়রানি মুলক মামলা দেয়া সামাজিকতা পরিপন্থী। সেদিন সে মসজিদে সকাল থেকে দুপুর তিনটা পর্যন্ত মসজিদের খেদমতে ছিলেন। মসজিদ উন্নয়ন কাজে টাকা সংগ্রহ করেছেন ও মসজিদের খেদমত করেছেন। পারিবারিক প্রতিহিংসা থাকতে পারে। তা আমার জানা নাই। তবে সে জন্যে একজন মুয়াজ্জিনকে ফাসানো ঠিক না।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার যদি তানিয়া ইসলাম কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই কামাল বলেন, আদালতের মামলার কাগজ পেয়ে আমি ঘটনাস্থান পরিদর্শন করেছি। মামলার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।